মুশতাক আহমেদ কে যে নির্যাতন করা হয়েছিল, কিশোরের বয়ানে শোনার আগে কোন নিউজপেপারে ছাপা হয় নাই। আমি ভাবতেছিলাম কেন ছাপা হয় নাই ? কারণ এই বিষয়টা সাংবাদিকেরা জানতো। একজন সুপরিচিত এবং অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য সিনিয়ার সাংবাদিক আমাকে জানিয়েছিলেন, মুশতাকের পরিবার সাংবাদিকদের এইটা জানিয়েছে।
কেন কোন নিউজ পেপার এইটা পিক করে নাই, সেইটা নিয়ে ভাবতে গিয়ে মনে হলো নিউজপেপার গুলো ভেবেছে যদি, মুশতাকের পরিবার পরে ব্যাক ট্র্যাক করে ,সেইটা নিয়ে তারা বিপদে পড়বেন।
ফলে , পত্রিকা গুলো এখন সরাসরি ফার্স্ট হ্যান্ড রেফারেন্স ছাড়া সরকারের জন্যে সেনসিটিভ কিছু ছাপাতে চায় না।
এখন কিশোরের রেফারেন্সে সবাই মুশতাকের উপরে নির্যাতনের কথা জানলেন।
আমি সব সময়েই ভেবেছি, মিথ্যা কথা বলার অধিকারটাই হচ্ছে বাক স্বাধীনতা।
কারণ আপনি যদি একটা রিজেনবল ট্রুথ , যেইটা মিথ্যাও হতে পারে, সেইটা নিয়ে আলোচনা করতে না পারেন তবে আপনি সত্যের কাছে পৌছাইতে পারবেন না।
একটা রিজনেবল ট্রুথ পরে মিথ্যা প্রমাণিত হতে পারে। সত্যও প্রমাণিত হইতে পারে।
কিন্তু, মিথ্যা বলার পূর্ণ অধিকার একটি একটি সমাজের ভেতরে থাকতে হবে।
কোন টা মিথ্যা কোন টা সত্য সেইটা সময়ের সাথে চেঞ্জ হয়। কোপারনিকাসের আমলে, পৃথিবীর সূর্যের চারেপাশে ঘুরে সেইটা ছিল মিথ্যা।
এখন সেইটা সত্য।
এই কারণে একটা সমাজে মিথ্যা বলার পূর্ণ অধিকার থাকা দরকার।
এমন না যে মিথ্যা বলার অধিকার থাকলে সবাই মিথ্যা বলবে। বরং মিথ্যা বলার অধিকার থাকলে, এবং সেই মিথ্যাকে অপজ করার অধিকার থাকলে সেই মিথ্যা ক্রমাগত বাতিল হইতে থাকে।
আজকে রাষ্ট্রীয় ভাবে যে মিথ্যাচারের চর্চা করা হয় তাকে অপজ করার সকল পথ বন্ধ করা হয়েছে।
আমি জানিনা আমরা যে অভিজ্ঞতা গুলোর ভেতর দিয়ে যাচ্ছি তাতে আমরা কি শিখতেছি। কিশোরের উপরে নির্যাতন, নির্যাতনে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর এই ঘটনা গুলো দিয়ে রাষ্ট্র ও সমাজ সম্পর্কে আমাদের বোঝা পরা পরিবর্তন হচ্ছে কিনা।
স্যাডলি আমার মনে হচ্ছে, না হইতেছেনা। সো কোল্ড মানবাধিকার কর্মীরা কিশোর এবং মুশতাকের উপরে নির্যাতন এবং মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে শিখছেন শুধু ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট বাতিল
করতে হবে। তাই তারা সেইটার বাতিল চাইতেছেন।
পুরো আলোচনা টা চলে গ্যাছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট নিয়ে। কিন্তু, এই আইন কি ম্যাটার করে ?
আমার ওয়ালে একজন বন্ধু মন্তব্য করেছেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিল করলে কি হবে ? তারপরে মাছ চুরির মামলায় ঝুলায় দিবে।
আসলে ডিজিটাল সিকিউরটি এক্ট বাতিল করে কি ছিঁড়বে ?
আমরা সবাই মিলে একটা রাষ্ট্র রাষ্ট্র খেলা খেলতেছি। যে রাষ্ট্রে সংবিধান আছে, আইন আছে, সেই আইনের লঙ্ঘন হয় তাতে সংবিধান লঙ্ঘিত হয়। তাতে মানবাধিকার কর্মীরা গোস্বা করেন।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, তাদেরকে যত দিন পর্যন্ত না আওয়ামী লীগ এসে কিশোর বা মুশতাকের মত ৩৬ ঘনটা ব্লাইন্ড ফোলড করে রাখবে, বৈদ্যুতিক শক দিয়ে গায়ের চামড়া ছিলে ফেলবে, কানের মধ্যে আঘাত করে কানের পরদা ফাটিয়ে দেবে – ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বোধ হবেনা। এই টা ডিজিটাল সিকিউরটি এক্ট ইস্যু না , এইটা কোন রাষ্ট্র রাষ্ট্র দুধভাত খেলা না।
এইটা একটা ফ্যাসিস্ট শক্তি সমাজের উপরে ফুল কন্ট্রোল নেয়ার জন্যে তার সম্পূর্ণ নিপীড়ন যন্ত্রের অত্যাচার। তারা, আইন সংবিধান, এক্ট কিছু পরোয়া করেনা।
এদের থেকে মুক্তি পেতে হলে, কোন আইন পরিবর্তন করে লাভ নেই। এদের থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের সকল অতীতের বিভেদ ভুলে, রাষ্ট্রের প্রতি টি পক্ষ কে এক হতে হবে। এদের নিপীড়নের শক্তির এগেন্সট সমাজের সামাজিক শক্তিকে এক করতে হবে। যেই শক্তিকে তারা উপেক্ষা করতে পারবেনা।
নইলে ইট উইল কাম। ইট উইল কাম এট ইউর ডোর এন্ড ইউ হ্যাব টু ফেস দা সেম কন্সিকিউন্স অফ মুশতাক ভাই এন্ড কিশোর । বি ফাকিং সিউর এবাউট ইট।
স্যাডলি আমার যেতে হবে। আমার কাজ আছে। আজ রাত থেকে দোকান বন্ধ থাকবে। বাই।