প্রথম আলো বেকিং পাওয়া এলিটরা, রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ চেয়ে যে পত্র লিখেছেন সেটা নিয়ে কিছু কথা লিখেছিলাম।
—–
শেখ হাসিনার সাম্রাজ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্র একটা রাষ্ট্র রাষ্ট্র এক্টিং করে যাচ্ছে। এলিটদের রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচনী কমিশনারের পদত্যাগ চেয়ে পত্র দেওয়া হচ্ছে, সেই, রাষ্ট্র রাষ্ট্র দুধভাত খেলার একটি দুর্বল অভিনীত সিন মাত্র।
আপনি এজিউম করে নিচ্ছে, নির্বাচন কমিশান নামে একটা ইন্সটিটিউশান আছে। তার একটা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করার কথা। কারণ একটা সংবিধানে সেইটা বলা আছে। । সেই মহান সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন, তাই দেশের নৈতিকতার মাথা এলিটেরা পত্র দিয়েছেন, রাষ্ট্রপতিকে – যেন তিনি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে নির্বাচন কমিশনারকে অপসারণ করে।
আমার বিশ্বাস বর্তমান রাষ্ট্রকে এইভাবে ইমেজিন করতে হইলে, নিজেকে ডন কুইকজটের মত একটা স্বপ্ন কল্পনার বাসিন্দা ভাবতে হয়।
এইটা যদি ডন কুইকজটের মত নিজের কল্পনার রাজ্যের আকাশ কুসুম কল্পনা হতো তাতে আমাদের কোন মাথা ব্যাথা ছিল না।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ লেভেলে এই ইস্যু গুলোকে, রাষ্ট্রের প্রধান সমস্যা হিসেবে ঠেলে দেওয়ার মাধ্যমে উনারা যেইটা করতেছেন, উনারা এই ফ্যাসিজম কে স্যানসিটাইজ করতেছেন।
রাষ্ট্রের অনেক বড় একটা শ্রেণির কাছে ফ্যাসিজমের অরিজিনাল চেহারার উপরে একটি সংবিধানের মুখোশ পরিয়ে দিচ্ছেন। পলিটিকাল ডিস্কোরসে, পলিটিক্সের মুল প্রশ্ন গুলোকে আড়াল করতেছেন। জনগণকে ডি পলিটিসাইজ করতেছেন।
২০১৪ এর পরে এই রাষ্ট্র নতুন ভাবে ডিফাইন হয়েছে। নতুন সোশাল কন্ট্রাক্ট রচিত হয়েছে। সংবিধান ফংবিধান ভুয়া।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নতুন পলিটিক্যাল স্যাটেলম্যান্ট এবং অলিখিত সংবিধান কি তার সবচেয়ে ভালো বলেছেন কুষ্টিয়ার আলোচিত এসপি সাহেব।
এসপি সাহেবের ভাষায় এই সংবিধানের মূলনীতি গুলো হচ্ছে,
এক। উল্টাপাল্টা করবেন, হাত ভেঙে দিবো, জেল খাটতে হবে।
দুই। একেবারে চুপ করে থাকবেন।…বাংলাদেশের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না। চুপ করে নিজের জীবনযাপন করবেন।
তিন। যদি আপনার বাংলাদেশ পছন্দ না হয়, তাহলে ইউ আর ওয়েলকাম টু গো ইওর পেয়ারা পাকিস্তান।
(সূত্র ডেইলি স্টার)
এসপি সাহেবের বক্তব্য বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে খুব স্পস্ট ভাবে ডিফাইন করে ,
উনি যখন বলতেছেন, উল্টাপাল্টা করল হাত ভেঙ্গে দিবো উনি মূলত আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করলে যে বিচার বহির্ভূত হত্যা গুম খুন মাইর ধর করা হবে, তার রেফারেন্স দিচ্ছেন।
জেল খাটতে হবে- বলে উনি বইচারিক নির্যাতন ইন্ডিকেট করেছেন। । খেয়াল আছে, আবরারকে মারার পরে কিন্তু পুলিশ ডাকা হইছিল, জামাত শিবির নাম দিয়ে, জেলে পাঠানোর জন্যে। ছেলেটা মরে যাওয়াতে পুলিশ নিয়ে যায় নাই, যে ভাবে এর আগে শত শত আবরারকে নেওয়া হয়েছে।
আপনি যদি না মানেন, আপনাকেও নেওয়া হবে, এইটা এসপি সাহেবের বক্তব্য।
এসপি সাহেব যখন বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না- রিড আওয়ামী লীগ যেভাবে আপনার আনুগত্য চাইবে, সেইটা ঠিক সেই ভাবেই দিতে হবে। যত অন্যায় নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হন, , কোন প্রশ্ন করতে পারবেন না, চুপ করে জীবন যাপন করবেন।।
আর তিন নাম্বার পছন্দ না হলে পাকিস্তানে চলে যান। এইটা উনি মিন করেছেন, এইটি বাকশাল ২.০। বাকশাল ২.০ এর নিয়ম মতে সব কিছু চলবে। না মানলে পাকিস্তানে চান।
—-
এই রাষ্ট্রকে চিনতে হলে এই রাষ্ট্রের মূল সংবিধান কি সেটা কে চিনতে হবে। কাগজের সংবিধান দিয়ে রাষ্ট্র চলে না। শাসকেরা রাষ্ট্রকে যে নীতি দিয়ে চালাই সেটাই হচ্ছে সংবিধান। বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্র এসপি সাহেবের এই সংবিধানে চলতেছে।
রাষ্ট্রের যদি পরিবর্তন চান তবে এই অলিখিত সংবিধানের পরিবর্তন আনতে হবে। লিখিত সংবিধান একটা শো অফ মাত্র।
বাংলাদেশের সংবিধান এবং আইন পর্যালোচনা করেন- এইটা তাদের প্রথম এবং প্রধান উপলব্ধি হইতে হবে।
হাস্তা লা ভিস্তা।