আসেন। একটা ক্লাসিক এবং অনেক পুরাতন প্রোপাগান্ডা পয়েন্ট ডিল করি।
আমার বন্ধু আনোয়ার উল্লাহ লিখেছেন যা অনেকেই বলে থাকেন।
“সকল দ্বন্দ্ব ভুুলে একত্রিত হওয়া, যুথবদ্ধ হওয়া, সমাজের শকল শক্তিকে সম্মিলিত করা- এরূপ অ্যালায়েন্স বিল্ডিংয়ে আমি তখনি উদ্বুদ্ধ হবো, যদি আপনি আমাকে এনসিওর করতে পারেন যে, বর্তমান ফ্যাসিস্ট শক্তির পতনের পর আরেকটি ফ্যাসিস্ট শক্তি তার স্থলাভিষিক্ত হবে না।
দেশে একটি শক্তিশালী তৃতীয় শক্তির নেতৃত্ব ব্যতিরেকে কোন অ্যালায়েন্স গড়ে ওঠবে না।
বিএনপি’র মতো ফ্যাসিস্ট দলকে দিয়ে আমি (সত্যিকার অর্থে বৃহত্তর নাগরিক সমাজ) রানিং ফ্যাসিস্টদের রিপ্লেসমেন্ট চাই না।”
======
এই বিষয় টা বামপন্থি মহলে খুব পুরাণ যুক্তি, আসেন এই যুক্তির ফ্যালাসি টা দেখি।
শক্তি কি , শক্তি কিভাবে কাজ করে । শক্তি কিভাবে তৈরি হয়, এই সব বিষয়ে আমাদের অনেকের কিছু ভ্রান্ত ধারনা আছে। বিএনপির আমলে প্রথম আলো , মেডিয়া, বিরোধী দল, সামাজিক শক্তি গুলো অনেক শক্তিশালি ছিল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময়ে, আওয়ামী লীগ শদুইএক হরতাল দিয়েছিল। তার মানে বিরোধী দলেরও শক্তি ছিল। তারা সরকারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারতো।
কিন্তু, বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার শুধুমাত্র বিরোধী সকল রাজনৈতিক শক্তিকেই নিশ্চিহ্ন করে নাই, সামাজিক শক্তিকেও নিশ্চিহ্ন করেছে , দুর্বল করেছে। এই যে মনে করেন, মোশতাক আহমেদকে মেরে ফেললো। মোশতাক ভাই, কিনত ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের ছাত্র । তার বন্ধুরা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। ক্যাডেট কলেজ ক্লাব ঢাকায় খুব শক্তিশালি এন্টিটি।
কিন্তু কেন সরকার পেরেছে ? কারণ, আজকে সরকার এলিটদেরকেও গোনে না ।
এই যে কিশোরের মত কার্টুনিস্টকে সরকার গুম করে নির্যাতন করে, জেলে ঢুকিয়ে রাখলো, বিএনপির আমলে কেন শিশির ভট্টাচার্য প্রথম আলোতে তারেক রহমান এবং খালেদা জিয়াকে নিয়ে যেমন ইচ্ছা তেমন কার্টুন আকতে পেরেছে ? এইটা কি তখন বাক স্বাধীনতা ছিল এই কারণে ?
নো , কারণ বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে এতো সর্বময় ক্ষমতাধারি শক্তিশালী এন্টিটি ছিলনা। সামাজিক শক্তি হিসেবে মিডিয়ার পাওয়ার ছিল। যে পাওয়ার মিডিয়া এক্সারসাইজ করেছে।
এই যে শক্তির ডিজমেন্টেলিং হয়েছে এইটা একটা আন্দোলন নতুন করে রিবিল্ড হবে।
এই রিবিল্ডিং কিভাবে হবে সেইটা কেউ বলতে পারেনা। কিন্তু, আমি একটা কমন সেন্স উইজডম শেয়ার করতে পারি।
যারা আন্দোলন করে, আন্দোলনে সফলতা আনবে, তাদের ভ্যালুজ এবং কথা মতে পোস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ভ্যালু এবং পাওয়ার রিবিল্ড হবে। কথার কথা বলছি, এই মুহূর্তে বামপন্থীদের হাতে মেডিয়া হেজেমনি আছে। কোন আন্দোলনে যদি এই হেজেমনি ব্যবহৃত হয়। তবে, ক্ষমতা পরিবর্তনের পরে বামপন্থিরা শক্তিশালী উঠবে কারণ তাদের পাওয়ার ব্যবহার করা হয়েছে।
ফলে বামদের উপরে নির্ভর করা আন্দোলনে আওয়ামী লিগের পতন হলে তখন, বামেরা সরকারে না থাকলেও শক্তিশালি থাকবে। সমাজে সেকুলার ভ্যালুজ থাকবে। সংবিধান আইন, তাদের ইচ্ছা মত সংশোধন হবে। ক্ষমতায় যেই থাকুক তাদেরকে মানতে হবে । কারণ যার পাওয়ার নেক্সট সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে তার পাওয়ার আবার সেই সরকারকে নামায় ও দিতে পারবে।
অন্য দিকে যদি আজকে – হাইপোথেটিকালি স্পিকিং – শুধু মাত্র ইস্লামিস্ট এবং বিএনপির যৌথ আন্দোলনে যদি সরকারের পতন হয় তখন সরকারে ইস্লামিস্টরা শক্তিশালি হবে। তাদের ইচ্ছা মত আইন সংবিধান সংস্কার হবে। তারা ক্ষমতায় না থাকলেও শক্তিশালী থাকবে।
কিন্তু যদি একটা সম্মিলিত শক্তির আন্দোলন ক্ষমতা পরিবর্তিত হয় সেখানে পাওয়ার কিভাবে বন্টিত হবে সেইটা জটিল প্রশ্ন। কিন্তু সেই খানেও ক্ষমতাশীল নাজুক থাকবে। কারণ তার একক আন্দোলনে ক্ষমতা পরিবর্তিত হয় নাই।
কিন্তু বি ভেরি ক্লিয়ার এই মুহূর্তে কোন সিচুয়েশান নাই যে, বিএনপি যদি একটা সরকার পতনের আন্দোলনের বেনেফিসিয়ারি হয় ও , বি এনপি আওয়ামী লিগের মত এমন কি পূর্বের বিএনপির মতো শক্তিশালী হয়ে উঠবে। চাইলেও পারবেনা। ফলে, বিএনপির কোন মতেই আওয়ামি লিগের মত ফ্যাসিস্ট হওয়ার সুযোগ নাই, তারা চাইলেও না।।
আমার সেকেন্ড হাইপোথেসিস হচ্ছে। আওয়ামী লিগের যদি পতন হয়ও তবুও আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লিগের বয়ান শক্তিশালী থাকবে।
মনে করুন আগামী কাল যদি আওয়ামী লিগের পতন হয় তবুও কিন্তু পুলিশে আওয়ামী লিগের ইন্সটাল করা বিগত ১০ বছরের নিয়োগ দেওয়া লোক গুলো রয়ে যাবে। প্রশাসনে বেছে বেছে আওয়ামীদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে এরা ক্ষমতায় রয়ে যাবে। প্রায় ১৫ বছর ধরে ছোট ছোট বাচ্চাদের ব্রেইন ওয়াশ করানো হয়েছে একটা ন্যারেটিভে। এই ন্যারেটিভের হিস্টরিকাল এলিমেন্ট গুলো এদের মাথায় গেঁথে গ্যাছে। এইটা রয়ে যাবে। প্রথম আলো আবার শক্তি শালি হয়ে উঠবে।
আওয়ামী লিগের বর্তমান শক্তির বড় উৎস ইন্ডিয়া এবং কালচারাল এস্টাব্লিশ্মেন্ট । এরা কোথাও চলে যাবেনা। এরাও পূর্বের মত শক্তিশালী থাকবে।
আমি প্র্যাক্টিকালি আগামী দশ বছরে আওয়ামী লিগের পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনাই দেখিনা। নাথিং। নাডা। কিন্তু যদি হাইপোথেটিকালি হয়ও তাতে যদি বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসেও, সে খুব দুর্বল একটা সরকার হবে। সেই সরকারেও আওয়ামী লীগের কিছু ইল্মেন্ট শক্তিশালী থাকবে।
দ্বিজ ইজ হাউ পাওয়ার ওয়ারক্স। যে ক্ষমতায় থাকে পাওয়ার শুধু তার কাছেই থাকেনা। ফ্যাসিজম তৈরি হয় যখন সোসাইটি ক্ষমতা শূন্য হয়। আজকে সামাজিক শক্তির মাধ্যমে সৃষ্ট কোন আন্দোলনের সোসাইটির সেই ক্ষমতা পুনরায় নির্মিত হবে।
ফলে, আজকে যদি একটি যৌথ আন্দোলন হয় তাহলে। আওয়ামী লীগ চলে গেলে বিএনপি আসলে সেও ফ্যাসিসট হবে, তাই আমি যৌথ আন্দোলন চাই না। এই ভাবনা গুলো খুব কিন্ডারগার্টেনের বাচ্চা টাইপ আলাপ।
গ্রো আপ।