ভারতকে আমি বাংলাদশ থেকে অনেক আগানো দেশ মনে করি। ২০১৫তে আমি চার মাস, ষ্ট্যাণ্ডার্ড চারটারড ব্যাংকের একটা প্রজেক্টে
চেন্নাই এ ছিলাম। আমার মনে হয়েছে, ভারত ডেভেলপ দেশ হওয়ার পথে দ্রুতই আগাচ্ছে।
ওয়েস্টের সাথে প্রকৃত ডেভেলপিং দেশের পার্থক্য হচ্ছে, ডেভেলপিং দেশে নিম্ন বিত্তদের বড় একটা অংশ এখনো মধ্যবিত্ত হয়ে উঠে নাই। এবং ডেভেল্পড দেশে কোন নিম্ন বিত্ত নাই।
ভারতকে নিয়ে আমার এসেস্মেন্ট হচ্ছে, ভারতের নিম্ন বিত্তের সংখ্যা অনেক বেশী। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেলে ভারত মধ্যবিত্ত তৈরি করেছে। এবং ভারতের ইনইকুয়ালিটি বাংলাদেশ থেকে অনেক কম। ভারতের নিন্ম বিত্তের ভালনারাবিল্টিও কম।
কভিডের প্রভাবে ২০২০ এ ভারতের দারিদ্রের হার জানুয়ারি ২০২০ এর প্রাক্কলিত ৪.৩% থেকে ৯.৭% এ নেমে আসে এবং ৭.৫ কোটি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে চলে যায়।
অন্যদিকে বাংলাদেশে মাত্র ৬৮ দিন লক ডাউনের প্রভাবে আপার পভার্টি রেট ২৪.৫ শতাংশ থেকে ৪২ শতাংশে এসেছে। ৪ কোটি মানুষ মানুষে দরিদ্র সীমার নীচে গিয়ে ২০০৫ সালের পর্যায়ে পৌঁছেছে।
কভিডের কারণে, ভারতে যদি বাংলাদেশের সমপরিমাণ প্রভাব পরতো তবে ভারতে ৭.৫ কোটির স্থানে ৪০ কোটি নাগরিক দরিদ্র হতো ।
এই আলাপের উদ্দেশ্যে হচ্ছে, ভারতে এখন যে কভিড ক্রাইসিস দেখতেছেন এইটা একটা ট্রু ডেভেলপিং দেশের ক্রাইসিস। যেই দেশে মোটামুটি বড় একটা অংশ হসপিটালে ক্রিটিকাল সেবা পায়। তাই ,কভিডের যখন এক্সপোনেন্সিয়াল গ্রোথ হয়েছে নতুন ভ্যারিয়েনটে তাদের হসপিটাল ওভার ওয়েল্ম হয়ে গ্যাছে। একই ক্রাইসিস ইতালিতে হয়েছে।ব্রাজিলে হয়েছে।
বাংলাদেশে ভারতের মত পর্যায়ে ক্রাইসিস হলেও , আমার বিশ্বাস হস্পিতালে সেই রকম পর্যায়ে চাপ পড়বে না। কারণ, আমাদের নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত জানে তারা কোন মতেই ক্রিটিকাল কেয়ার পাওয়ার চান্স নাই।
সে তার আত্মীয়কে হসপিটালেই নেবে না।
অথবা এই সময়ে পাড়ায় পাড়ায় সেন্টার গড়ে উঠবে। সমাজের ভেতর থেকেই চিকিতসার মেকশিফট বন্দোবস্থ হবে।
গত বছর আগস্ট সেপ্টেম্বারে আমি তাই দেখেছি, অনেকে এলাকায় স্থানীয় ভাবে ছোট ছোট সেন্টার গড়ে উঠেছিল।
মানুষ নিজের থেকেই অক্সিজেন সিলিন্ডার এরেঞ্জ করে চিকিৎসা দিয়েছে। আমার খুব কাছের একজন সিনিয়ার সিটিজেন প্রায় যায় যায় অবস্থায় ফিরে এসেছেন, তাকে হসপিটালে নেওয়া হয় নাই। মধ্যবিত্ত পরিবারের। যেহেতু তারা জানে হসপিটালে সিট নেই, তাই চেষ্টাও করে নাই।
বাংলাদেশে ভারতের মত অবস্থা হয় নাই। কিন্তু, মানুষের রিএকশন দেখে আমার মনে হয় , একদম ক্রিটিকালি সব কিছু ভেঙ্গে পরা ভিজিবল হওয়ার আগে আমরা দুর্যোগকে স্বীকৃতি দেই না।
বাংলাদেশে অবিশ্বাস্য পরিমান মানুষ মারা যাচ্ছে।
ফেসবুকে ঢুকলেই মিনিমাম দুই জন মৃত্যুর সংবাদ পাচ্ছি।
কিন্তু সমাজ সব কিছু ম্যানেজ করে নিচ্ছে। মানুষ মরছে। কবর দিয়ে দিচ্ছে।
দেন উই মুভ অন।
আমরা ওয়েট করে আছি, কবে ভারতের মত সিচুয়েসান হবে। তখনই আমরা বলবো , খুব খারাপ অবস্থা হয়েছে।
ভারতে যে ক্রাইসিস দেখা দিয়েছে, সেইটা বাংলাদেশে কখনই হবেনা। এমন কি যদি ভারত থেকে দশ গুন বেশী, মানুষ মরলেও হবেনা। আমাদের সমাজের একটা অদ্ভুত ক্যাপাসিটি আছে, সব ধরনের ক্রাইসিসকে লুকিয়ে রেখে বিজনেস এজ ইউজুয়াল চালিয়ে যাওয়ার।
এইটা ভালো না খারাপ তা বোঝার ক্ষমতা আল্লাহ আমাকে দেয় নাই