শেখ হাসিনার মত করে, আর কোন শাসক সমাজকে এইভাবে করাপ্ট করেছে কিনা আমার জানা নাই । পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক নৃশংস শাসক এসেছে যারা লক্ষ লক্ষ নাগরিককে হত্যা করেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক শাসক এসেছে, যারা মিলিযন মিলিযন ডলার চুরি করেছে, পাচার করেছে। কিন্তু প্রতিটা শাসককে সমাজ, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রের ভ্যালুর কিছু আদর্শ রক্ষা করতে হয়েছে। কারণ শাসক তো একলা শাসন করেনা। তার আশে পাশে অনেকেই থাকে। তাদের সকলের পরিবার রয়েছে, তাদের সকলকে মাথায় রাখতে হয় পতনের পরে – আমার পরিবারকে টিকে থাকতে হবে। সেই জন্যেও সমাজকে একেবারে ধ্বংস করে ফেললে চলবেনা।
শেখ হাসিনার পাশের টপ লিডারশীপের ৯৯% – দেশের বাহিরে সম্পদ পাচার করে, ইনভেস্টর ক্যাটাগরিতে অথবা কোন না কোন ভাবে সিটিজেশানশিপ নিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। তারপরে তারা আবার দেশে ফিরে এসে আবার সেই টাকা ফিরিয়ে এনে ইনভেস্ট করেছে।
তাদের পুরো ফ্যামিলি দেশের বাহিরে। এইটা তাদেরকে সব কিছু ধ্বংস করতে যেভাবে ইন্সেন্টিভাইজ করেছে, পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কম শাসক এই ভাবে শাসন করেছে।
এই প্রসেসে সমাজের সব চেয়ে পতিত ব্যক্তি এবং সব চেয়ে জঘন্য ব্যক্তিত্বকে হাসিনা পুরস্কৃত করেছে । ফলে আওয়ামী লিগের ভেতরে এবং প্রশাসনে একটা প্রতিযোগীতা সৃষ্টি হয়েছে কে কত নৃশংস হতে পারে, কত লজ্জাহীন ভাবে মিথ্যা বলতে পারে, কত ইফিসিয়েন্টলি লুট করতে পারে।
এই কারণে আপাত সেন্সিবল এবং র্যাশ্নাল মানুষের ভেতর থেকেও পশুটা হাসিনা বের করে নিয়ে আসতেছে। রাষ্ট্র সমাজ প্রতিষ্ঠানের সব চেয়ে জঘন্য , বিবেকহীন ও অসৎ ব্যক্তিদেরকে হাসিনা সমাজের , রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে নিয়ে এসেছে। এই প্রসেসকে আমি নাম দিয়েছি বাস্টারডাইজেশান।
এর সব চেয়ে ভালো উদাহরণ হল নিঝুম মজুমদার।
আমি ব্যক্তি নিয়ে কথা বলা পছন্দ করিনা। কিন্তু সমাজের কোন একটি ট্রেন্ড এবং রাষ্ট্রের এতো বড় একটা ক্ষতের বিষয়টিকে স্পষ্ট হলে ব্যক্তির উদাহরণ প্রয়োজনীয়ও।তাই নিঝুমের উদাহরণ দিতে হচ্ছে।
নিঝুম মজুমদার সব সময়েই বিবেক হীন ছিল। সে যেইটা এস্টাবলিশ করতে চায়, ,তার পক্ষে সে সেন্ট্রাল যুক্তি গুলো স্থাপন করবে। বিপক্ষের সেন্ট্রাল যুক্তিটিকে এটেন্ড না করে উড়িয়ে দেবে। এবং বিপক্ষের আর্গুমেন্টকে নিজের মত করে বলে সেইটাকে সে নালিফাই করবে।
এইটাকে আমরা বিতর্কের ভাষায় স্ট্রম্যান বলি।
এইটা খুব নোংরা কাজ কিন্তু, অনেকেই করে।
আমার সাথে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রাজনৈতিক ব্যবহার নিয়ে নিঝুমের সাথে কিছু হেলদি ডিবেট আছে। সে সব সময়েই ব্যক্তি আক্রমণ করেছে কিন্তু তার সাথে সে শক্তিশালি আর্গুমেন্ট দিয়েছে। নিঝুম মজুমদারকে আমি সব সময়েই সিরিয়াসলি নিয়েছি কারণ, নিঝুম প্রচণ্ড পরিশ্রমী। সে একটা লজিকের সেকেন্ড এবং থার্ড লেয়ারে অপারেট করে। অর্থাৎ আপনি ফার্স্ট লেয়ার যুক্তির যে কাউন্টার দিয়েছেন নিঝুম, সেইটার কাউন্টার দিয়েছে। তাই বিতর্কটাকে যদি আগায় নিতে হয়, তাহলে তাহলে আপনার নিঝুমের লজিকটার উত্তর দিতে হবে।সেইটা যদি আপনি দেন, তারপরে নিঝুম যে উত্তর দিবে সেইটা আপনার ডিবেটের ফোরথ লেয়ার।
নিঝুম মোটামুটি থার্ড এবং ফরথ লেয়ারে যুক্তি দিতে সক্ষম । থার্ড এবং ফোরথ লেয়ারে যুক্তি দিতে হলে, আপনাকে হাসান মাহমুদ লেভেল থেকে বের হতে হবে, প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে হবে। আমি নিঝুমের মধ্যে সেই অধাবসায় দেখেছি। বিপক্ষ দলের হলেও তার প্রতি আমার একটা শ্রদ্ধা ছিল।
এবং নিঝুম এই রকম ক্রিমিনাল ছিল না। সে ব্যক্তি আক্রমণ করতো। ।তার সাথে বিতর্কে আমার টেরিবল অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু নিঝুম ক্রিমিনাল ছিলনা। আমি সব সময়েই ফিল করেছি, আই ক্যান ডিল হিম। তাই, আমি তার আর্গুমেন্টের সাথে এঙ্গেজ হয়েছি। তাকে কাউন্টার দিয়েছি।
কিন্তু, এক সময়ে দেখলাম তার ব্যক্তি আক্রমণ এমন নিচু পর্যায়ে যাচ্ছে যে পর্যায়ে আর আমি তার সাথে এঙ্গেজ হতে পারবোনা।
তখন আমি তাকে ব্লক করি। কারণ আমি দেশে ছিলাম এবং তার সাথে আমার ডিবেট গুলোর কারণে আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নাজুক হচ্ছিল।
আমি ধীরে ধীরে দেখতে থাকি। কিভাবে নিঝুম তার যুক্তির ক্ষমতা ইন্ডিফেন্সিবলকে ডিফেন্ড করার কাজে ব্যবহার করা শুরু করে। আর শেখ হাসিনা কিভাবে নিঝুমের মধ্যেকার সবচেয়ে ওরস্ট এলিমেন্টটাকে বের করে নিয়ে আসা শুরু করে। তাকে আমি আর ফলো করিনা। এক জন বন্ধু আমাকে শেয়ার করছিল যে, সে নাকি লিখেছে ২০১৮ এর নির্বাচন ও ফেয়ার হয়েছে। সে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখেছি সুষ্ঠু ভাবে মানুষ ভোট দিচ্ছে। বাই দ্যাট টাইম আমি নিঝুম কে নিয়ে আর আগ্রহী ছিলাম না।
আমি তাকে নিয়ে আর তেমন কোন কোয়ালিফায়ার ব্যবহার করতে চাই না।
কিন্তু আমি আমার বন্ধুদেরকে একটা প্রশ্ন করতে চাই। আপনরা কেন এই ধরনের লোকের সাথে এঙ্গেজ হন। ইউ সি আপনি তার সাথেই এঙ্গেজ হবেন যে আপনার লজিকের একটা যৌক্তিক রেসপন্স দেবে। কিন্তু, যে তার আদর্শকে রক্ষার জন্যে দিনকে বলবে রাত, রাতকে বলবে দিন, তার সাথে আপনি কি বিতর্ক করবেন ?
সেকেন্ডলি আপনি তার সাথেই আর্গুমেন্ট করবেন, যে আপনার সমান ডিগ্নিটি রাখে।
লেটলি একটা আলোচনায় নিঝুমের ব্যক্তিগত কিছু বিষয়ের প্রসঙ্গ আসে।আমাদের সবার অপিনিয়ন ছিল, নিঝুমের এই বিষয় গুলো নিয়ে আমরা কথা বলতে পারবোনা। কারণ এইটা নিঝুমের সাথে বিতর্কে রিল্ভেন্ট বিষয় না। নিঝুমের সাথে এঙ্গেজ হলে তার লজিককে আমাদের ফেস করতে হবে।
কিন্তু নিঝুম কি আপনার সেই ডিগনিটি রাখবে ? সে আপনার নামে এইটা সেইটা বানায় মিথ্যাচার করবে, যখন আপনি তাকে ফরথ লেয়ারেও উত্তর দিবেন যখন সে জানবে তার আর বলার কিছু নাই । তাহলে কেন আপনি তার সাথে এঙ্গেজ হতে যাবেন ?
দা রুল ইজ, আজকে শেখ হাসিনার এই আমলে, কোন কিছু লুকিয়ে হচ্ছেনা। মানুষের উপরে নির্যাতন, টরচারে মৃত্যু, দেশ ধ্বংস, লুট, পাচার- চোখের সামনে হচ্ছে। মিডিয়া লিখুক না লিখুক , একটা ৪ বছরের বাচ্চাও জানে, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের প্রশ্রয়ে, সম্মতিতে সবাই মিলে এরা সব লুটে পুটে খাচ্ছে ।
এইটাকে যে ডিফেন্ড করতে আসবে, যে আপনি নিজের চোখে দেখেছেন। সে বিভিন্ন ভাবে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে যুক্তি স্থাপণ করবে, এইটা হয় নাই- যে যুক্তি দিয়ে আপনার বেসিক কমন সেন্স এবং সেন্সিবিলিটিকে প্রশ্ন করবে -আপনি তাকে কি যুক্তি দিবেন ?
নিঝুম যদি বলে, আওয়ামী লীগ রাতের বেলা ভোট চুরি করেছে আপনি কি দেখছেন ? ঠিকই তো ৯৯% মানুষই তো দেখে নাই, রাইতের বেলা কিভাবে ব্যালেট বক্স স্টাফিং হইছে কিন্তু আপনি জানেন, কি হইছে। কিন্তু নিঝুম আপনার কাছে প্রমাণ চাইলে আপনি কি প্রমাণ দিতে পারবেন ? পারবেন না।
এই নব্য প্রজন্মের রাজাকাররা যারা এই দেশের সর্বস্ব ধ্বংস হওয়া পর্যন্ত এই ধরনের ক্রিমিনাল লজিক দিবে তাদের সাথে আপনি কি বিতর্ক করবেন ?
জাস্ট ইগনোর দেম। ডোনট এনগেজ।
আমার কিছু বন্ধুর আমাকে মেসেজ করতেছেন। নিঝুম আমার পোস্ট শেয়ার দিছে। আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আমি শেখ হাসিনার বাস্টারডাইজেশান প্রক্রিয়াতে উঠে আসা নিকৃষ্ট ফ্যাসিসট এপলিজিস্ট ক্রিমিনালের সাথে এঙ্গেজ হবোনা।
সো এই গুলো আর আমাকে মেসেজে দিয়েন না।
থ্যাংকস।