বাংলাদেশ চিনের খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে গ্যাছে!

বাংলাদেশ চিনের খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে গ্যাছে, এবং ভারতকে ছেড়ে বাংলাদেশ চিনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।  চীন বাংলাদেশে ১০ বিলিয়ন ডলার, ২০ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট করছে এমন ফেটিসাইজড ফ্যান্টাসি ছড়ানোটা আমাদের সোশাল মিডিয়ার স্টার আলোচকরা ছাড়তে পারতেছেন না।

এর পেছনে আছে আরো কিছু স্টার সাংবাদিক। যেমন  মানব জমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী।

আমি মাস দুই আগে, স্ক্রলে ডিটেল ডাটা দিয়ে লিখেছিলাম, বাংলাদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার চাইনিজ ইনভেস্টমেন্টর গল্প যে একটা মিথ- সেইটা নিয়ে। এবং তখন সোশাল মিডিয়াতে লিখেছিলাম, বাংলাদেশ সত্যি সত্যি ভারত ছেড়ে চিনের দিকে যায়  তার প্রমাণ হবে যদি বাংলাদেশ চায়না থেকে ভ্যাক্সিন নেয়, ভারত থেকে না নেয়।

এবং তারপরে কি হয়েছে তা আমরা জানি। চীন অনেক ঝোলাঝুলি করেছে বাংলাদেশের চ্যানেলটা করানোর জন্য। চাইনিজ রাষ্ট্রদূত মিডিয়ার সামনে এসে বলেছে যে, সে নিজে ভ্যাক্সিনের ‘ট্রায়াল নিজে নিবে ।

কিন্তু তার অনেক  অনেক দৌড় ঝাপ সত্ত্বেও , বাংলাদেশ ৬০ কোটি টাকার অজুহাত দেখিয়ে চিনা ট্রায়াল বাদ দিয়েছে,  চুক্তি করেছে ভারতের সাথে এবং এখন আছোলা বাম্বু খাচ্ছে ।

কিন্তু তবুও, আমাদের সোশাল মিডিয়া স্টার দের শেখ হাসিনার চায়নার দিকে ঝুলে পরা নিয়ে ফ্যান্টাসি যাইতেছেনা।

এর মধ্যে আর একটা ঘটনা আছে। সেইটা হচ্ছে, গতমাসে চাইনিজ ডিফেন্স মিনিস্টার  সাউথ এশিয়া ভ্রমণ করে। উনি নেপাল গ্যাছে, পাকিস্তানে গ্যাছে- কিন্তু বাংলাদেশে আসার কথা থাকলেও আসে নাই।

কিন্তু, কেন চাইনিজ ডিফেন্স মিনিস্টার বাংলাদেশের সফর বাতিল করলো , সেইটা কি ভারতের চাপে বাংলাদেশের অনিচ্ছায় কিনা, সেইটা নিয়ে বাংলাদেশের আলোচকরা কোন আলোক পাত করে নাই। তারা তাদের বাংলাদেশের চিনের দিকে ঝুঁকে পরা নিয়ে একটা  পারসেপ্সন বলেই যাচ্ছেন।সেইটাও পাবলিক বিশ্বাস করতেছে।  বাংলাদেশে নাকি, প্রশাসনে-চাইনিজ ব্লক তৈরি হয়েছে আরো কি কি বালছাল।

সব চেয়ে বড় ভুয়ামি হইলো, বাংলাদেশে ২০ বিলিয়ন ডলার চাইনিজ ইনভেস্টমেন্ট। আমি কমেন্টে ঢাকা ট্রিবিউনের  একটা রিসেন্ট আর্টিকেল দিচ্ছি।  তাতে দেখবেন।

বাংলাদেশে চায়না গত তিন বছরে ঋণ দিয়েছে,  ২ বিলিয়ন ডলার। মানে বছরে, এভারেজ ৭০০ মিলিয়ন ডলার। মানে, বছরে ৫৬০০ কোটি টাকা। ফুহ, আমাদের পিকে হালদার তার গারলফেন্ডদের এর চেয়ে বেশি টাকা দেয়।

যদি এইটা জাপান হইতো তাও মানতাম। জাপান, ২০১৮ তেও দিয়েছে ১.৫৪ বিলিয়ন ডলার।২০২০ অর্থ বছরে দিয়েছে  ১.৬৯ বিলিয়ন ডলার।

গত জুলাই নভেম্বরে জাপান দিয়েছে, ৭২৪ মিলিয়ন ডলার যা ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবি, চায়নার থেকে বেশি।

তার মানে জাপান আড়াই বছরে ৩.৭ ডলার ঋণ দিয়েছে যা চায়নার তিন বছরে দেওয়া ঋণ থেকে প্রায় দ্বিগুণ।

যদি এরা বলতো, বাংলাদেশ জাপানের ব্লকে চলে যাচ্ছে আমি তাও মানতাম।

এমন কি চায়নার সাইড থেকেও মেজর কোন সিগনাল নাই।

খুব ইম্পরট্যান্ট একটা ঘটনা বলি।

চায়না বরং আরেকটা কাজ করেছে।

পূর্বে চায়নার এক্সিম ব্যাংক থেকে কোন উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ নিতে হলে,  চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির বৈদেশিক শাখা এবং একজিম ব্যাংকের ছাড় পেলেই হতো।

কিন্তু গত বছর চায়না এই অর্থ ছাড় প্রক্রিয়াতে আরো দুইটি স্টেপ যোগ করেছে, তা হচ্ছে, ঢাকার চাইনিজ দূতাবাস এবং চায়নার আর একটি রেগুলেটরি সংস্থা। ফলে , চায়না থেকে ঋণের অনুমোদন পেতে হলে বাংলাদেশকে এখন পূর্বে দু’টি বদলে চারটি প্রতিষ্ঠান বাধা  পেরোতে হয়।বাংলাদেশের চাইনিজ ঋণ পাওয়া আগের থেকে কঠিন হয়েছে।

তার মানে চায়না ইনফরমাল ব্যারিয়ার বাড়াচ্ছে।

কিন্তু কোথা থেকে চাইনিজ ২০ বিলিয়ন ডলার, ১০ বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের গল্প করতেছেন উনারা । আল্লায় জানে। 

আমি একটা এডভাইজ দেই। শেখ হাসিনার শাসনামলে নিজের চোখকে বিশ্বাস করবেন। শেখ হাসিনা কোন কিছু লুকায় করেনা, উনি জানে আপনারা সবাই জানেন যে, মিডনাইট ইলেকশনে আওয়ামী লিগ ক্ষমতায় আসছে। তাও উনি বলেন, আমি জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনেছি।

তার মানে কি ? তার মানে হইলো, উনি চাচ্ছে আপনি আপনার চোখকে অবিশ্বাস করেন।

সোশাল মিডিয়াতে বাংলাদেশের চাইনিজ ব্লকে চলে যাওয়ার প্রোপাগান্ডাটাও এইরকম একটা অল্টারনেট রিয়ালিটি।

তাই বলি কি  ট্রাস্ট ইয়োর আইস। বাংলাদেশ ভারতের রক্ষিতাই আছে। থাকবে।

নাথিং চেঞ্জড।

গেট রিয়েল।

Leave a Reply

Your email address will not be published.