বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কালে, এলিটদের দুইটি গ্রুপের বিবৃতি নিয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কালে, এলিটদের দুইটি গ্রুপের বিবৃতি নিয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে।একটি হচ্ছে আওয়ামী পন্থি এলিট, এবং অপরটি এলিট ক্রিয়েটর প্রথম আলো ব্যাকড এলিট।

এই দুইটি গ্রুপের মধ্যে, যদি চারিত্রিক দৃঢ়তা, নিজের বিশ্বাসের প্রতি কনভিকশন এবং রাজনৈতিক চিন্তার সচ্ছতার কোন মানদণ্ড থাকে আমি যে কোন দিন আওয়ামী এলিটদের গ্রুপটিকে বেছে নেব।কেন?লেটস টেক প্রথম আলো ব্যাকড এলিটদের সমস্যা।আই মিন, হু ইন দিস ফা… ২০২০ ইন দেয়ার রাইট সেন্স অফ মাইন্ড ক্যেন ইভেন ইমেজিন ওয়িদাউট আন ইন্ডাস্ট্রিয়াল এমাউন্ট অফ উইড যে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে রসিকতা হইতেছে তার দায় নির্বাচন কমিশানারের না ? কে জানেনা, এই লোকটি একটা বাথরুমের ময়লা পরিস্কার করার ব্রাশ মাত্র । ইট ইজ শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামীলীগ যে এই সব নির্বাচন প্ল্যন করছে ডিজাইন করছে, ইমপ্লিমেন্ট করেছে। এই নির্বাচন কমিশনার গেলে আরেকজন আসবে, ফলে, এই লোকটা জাস্ট কন্সেন্ট্রেশান ক্যাম্পের গার্ড মাত্র। কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তার নেই।

প্রথম আলো ব্যাকড এলিটদের একটা অংশ খুব জিহাদি জোশে নিজের নৈতিকতার ঝোলা নিয়ে এই রাষ্ট্রে বিশাল এক আলোচনা সৃষ্টি করলেন যে, এই কমিশনার একটি অভিশংসনযোগ্য অপরাধ’ করেছে, তাই তাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং সেই অভিশংসনের জন্যে উনারা চিঠি লিখছেন, আওয়ামী লীগের আরেক লাঠিয়াল ফুট সোলজার, রাষ্ট্রপতির কাছে।রাষ্ট্রপতির কাছে, নির্বাচন কমিশনারের অভিশংসনের আবেদন ?রিয়েলি ? আই মিন কি উইড খাইতেছিলেন ? ক্যান ইউ প্লিজ শেয়ার ?আমি ব্রান্ড নেম টা জানতে চাই।

আমি জানি উনারা কি বলবেন। আমি উনাদের মধ্যে কয়েকজনকে প্রচন্ড পছন্দ করি রেস্পেক্ট করি।আমি জানি উনারা বলবেন, আমরা যেহেতু তেনার নাম নিতে পারছিনা, তাই, আমরা এই পদ্ধতিতে দেখাচ্ছি যে, হাসিনার নির্বাচন অনৈতিক পদ্ধতিতে হয়েছে।বুলশিট। বাংলাদেশের সব চেয়ে লাথি খাওয়া গায়ের লোম উঠে যাওয়া ডাস্টবিনের কুকুরটাও জানে, শেখ হাসিনা মিড নাইট ইলেকশানে মানুষের ভোট দেওয়ার ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় আসছে। এইটা নতুন করে প্রমান করার কিছু নাই।এখন যেইটা করার আছে, সেইটা হচ্ছে সম্মিলিত গলায় বলা – স্বৈরাচার মানিনা, শেখ হাসিনা গদি ছাড়।কিন্তু সেইটা যদি আপনি বলতে না পারেন, যদি আপনার সাহসে না কুলায়, যদি আপনার মান সম্মান ইজ্জত পজিশান, বন্ধু বান্ধব, চাকুরী, ব্যবসা বাস্তবতা, রিস্ক, দমন নিপীড়নের ভয় সব কিছু মিলায় বলা সম্ভব না হয় – উই আন্ডারস্টান্ড- চুপ থাকেন।এই রাজনীতি আপনার না। কিন্তু, হাঁসফাঁস করা অবস্থায় চুপ থাকতে না পেরে কেন আপনি এই সব ফ্যাসিজম স্যানিটাইজেশানের রাজনীতি করবেন? আপনি বরং উচ্চাঙ্গ সঙ্গিতের ক্রিটিসিজম করেন, অথবা ইস্যু ভিত্তিক সমালোচনা করেন, অথবা প্রতিটা কথায় শাসক শ্রেণি নামে একটি বর্গের সমালোচনা করে বিএনপি আওয়ামী লীগ সব সমান যুক্তি দিয়ে নিজের ন্যায্যতা টিকিয়ে রাখেন। দ্যাটস কুল।

কিন্তু, শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশনারকে, নিয়ে টানাটানি হচ্ছে, এসেন্সিয়ালি সোসাইটিকে ডি পলিটিসাইজ করা।একটা দুর্বিষহ ফ্যাসিজমকে স্যানিটাইজ করা।

থিঙ্ক,গ্যাস চ্যাম্বারে মানুষ মারার সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছে, হিটলারের সেই জেনারেলদের দায়ি না করে, দায়ি করা হলো কন্সেন্ট্রেশান ক্যাম্পের দারোয়ান বা ক্যাম্প কমান্ডারদের।অথবা চিন্তা করেন, এরশাদের আমলে সবাই আন্দোলন করছে, প্রধান নির্বাচনী কমিশনারের পদত্যাগের জন্যে।অনেক আগেই বলেছি্‌ শেখ হাসিনার সাম্রাজ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্র একটা রাষ্ট্র রাষ্ট্র এক্টিং করে যাচ্ছে। এলিটদের রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচনী কমিশনারের পদত্যাগ চেয়ে পত্র দেওয়া হচ্ছে, সেই, রাষ্ট্র রাষ্ট্র দুধভাত খেলার একটি দুর্বল অভিনীত সিন মাত্র।আপনি এজিউম করে নিচ্ছে, নির্বাচন কমিশান নামে একটা ইন্সটিটিউশান আছে। তার একটা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করার কথা। কারণ একটা সংবিধানে সেইটা বলা আছে। । সেই মহান সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন, তাই দেশের নৈতিকতার মাথা এলিটেরা পত্র দিয়েছেন, রাষ্ট্রপতিকে – যেন তিনি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে নির্বাচন কমিশনারকে অপসারণ করে।

আমার বিশ্বাস বর্তমান রাষ্ট্রকে এইভাবে ইমেজিন করতে হইলে, নিজেকে ডন কুইকজটের মত একটা স্বপ্ন কল্পনার বাসিন্দা ভাবতে হয়।এইটা যদি ডন কুইকজটের মত নিজের কল্পনার রাজ্যের আকাশ কুসুম কল্পনা হতো তাতে আমাদের কোন মাথা ব্যাথা ছিল না।কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ লেভেলে এই ইস্যু গুলোকে, রাষ্ট্রের প্রধান সমস্যা হিসেবে ঠেলে দেওয়ার মাধ্যমে উনারা যেইটা করতেছেন, উনারা এই ফ্যাসিজম কে স্যানিটাইজ করতেছেন।এইটার মাধ্যমে উনারা, রাষ্ট্রের অনেক বড় একটা শ্রেণির কাছে ফ্যাসিজমের অরিজিনাল চেহারার উপরে একটি সংবিধানের মুখোশ পরিয়ে দিচ্ছেন। পলিটিকাল ডিস্কোরসে, পলিটিক্সের মুল প্রশ্ন গুলোকে আড়াল করতেছেন। জনগণকে ডি পলিটিসাইজ করতেছেন।এবং ফ্যাসিস্টদেরকে তাদের মুল শাসনের অনৈতিকতার মূল প্রশ্ন গুলো বাদ দিয়ে, ডিল করার জন্যে সহজ কিছু প্রশ্ন দিচ্ছেন। এবং আমার বিশ্বাস শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনের আগে উনাদের দাবী মেনেও নেবেন।এবং আমরাও আরো পাচ বছর নতুন কোন নির্বাচন কমিশানের অধীনে, হাসিনাশাহীর নেতৃত্বে ভিশান ২০৫০ এর স্বপ্ন পুরন করতে এগিয়ে যাবো।শেখ হাসিনা উনাদের দাবীও কিন্তু মেনে নিলেন ?খুশি ?দুলাভাই, আমি খুশি।অন্য দিকে আওয়ামী এলিটদের জন্যে বাংলা খুব পরিস্কার। এবং তাদের সততা প্রশংসাযোগ্য।তারা জানেন, ২০১৪ এর পরে এই রাষ্ট্র নতুন ভাবে ডিফাইন হয়েছে। নতুন সোশাল কন্ট্রাক্ট রচিত হয়েছে। সংবিধান ফংবিধান ভুয়া। তাদের কথা হইলো এই সোশাল কন্ট্রাক্ট মতে রাষ্ট্র চলবে। এই জন্যে তারা কুষ্টিয়ার পুলিশ এসপির প্রটেকশানে আগায় আসছেন।কারণ এসপি সাহেব যা বলছেন, সেইটাই কিন্তু, বর্তমান রাষ্ট্রের নতুন পলিটিকাল স্যাটেল্মেন্ট- অলিখিত সংবিধান।এসপি সাহেবের ভাষায় এই সংবিধানের মূলনীতি গুলো হচ্ছে,এক। উল্টাপাল্টা করবেন, হাত ভেঙে দিবো, জেল খাটতে হবে।দুই। একেবারে চুপ করে থাকবেন।…

বাংলাদেশের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না। চুপ করে নিজের জীবনযাপন করবেন।তিন। যদি আপনার বাংলাদেশ পছন্দ না হয়, তাহলে ইউ আর ওয়েলকাম টু গো ইওর পেয়ারা পাকিস্তান।(সূত্র ডেইলি স্টার)এসপি সাহেবের বক্তব্য বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে খুব স্পস্ট ভাবে ডিফাইন করে ,উনি যখন বলতেছেন, উল্টাপাল্টা করল হাত ভেঙ্গে দিবো উনি মূলত আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করলে যে বিচার বহির্ভূত হত্যা গুম খুন মাইর ধর করা হবে, তার রেফারেন্স দিচ্ছেন।জেল খাটতে হবে- বলে উনি বইচারিক নির্যাতন ইন্ডিকেট করেছেন। ।

খেয়াল আছে, আবরারকে মারার পরে কিন্তু পুলিশ ডাকা হইছিল, জামাত শিবির নাম দিয়ে, জেলে পাঠানোর জন্যে। ছেলেটা মরে যাওয়াতে পুলিশ নিয়ে যায় নাই, যে ভাবে এর আগে শত শত আবরারকে নেওয়া হয়েছে।আপনি যদি না মানেন, আপনাকেও নেওয়া হবে, এইটা এসপি সাহেবের বক্তব্য।এসপি সাহেব যখন বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না- রিড আওয়ামী লীগ যেভাবে আপনার আনুগত্য চাইবে, সেইটা ঠিক সেই ভাবেই দিতে হবে। যত অন্যায় নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হন, , কোন প্রশ্ন করতে পারবেন না, চুপ করে জীবন যাপন করবেন।।আর তিন নাম্বার পছন্দ না হলে পাকিস্তানে চলে যান। এইটা উনি মিন করেছেন, এইটি বাকশাল ২.০। বাকশাল ২.০ এর নিয়ম মতে সব কিছু চলবে। না মানলে পাকিস্তানে চান।

আমি আওয়ামী লীগের এলিট সুশিল বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রশংসা করি, কারণ, তারা গিভস এ ফাকিং শিট, আপনি কি ভাবতেছেন। তারা পিউরলি পলিটিকাল। এবং তারা রিয়াল।তাই, তারা প্রজাতন্ত্রের একটা কর্মচারীর মুখে এই আলাপ শুনেও, সামান্যতম ইতস্তত বোধ করেন না। কারণ, উনারা এসপি সাহেবের এই রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন। এই রাজনীতি উনারাই ডিফাইন করেছেন।তারা পলিটিকাল পজিশনে কোন ধরনের এমবিগিউটি নাই। কারন,তারা জানেন এসপি সাহেব যেইটা বলছেন, সেইটা বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সংবিধান।এই জন্যে তারা এসপি সাহেবকে প্রটেকশান দিতে বিবৃতি দেন। কারণ, এই টি তাদেরই পজিশান।আওয়ামী লীগ যে ভাবে চায় সেই ভাবেই দেশ চলবে, যারা যারা শুনবে না তাদের মাইরা হাত পা ভেঙ্গে , জেলে ঢোকানো হবে।এবং যদি সহ্য করতে না পারেন, তবে চুপ করে থাকেন। নইলে, পাকিস্তানে চলে যান।এই খানে নির্বাচন টিরবাচন নিয়ে কোন এক্টিং নাই, দুধ ভাত খেলা নাই। তারা জানে, নির্বাচন ফারস। দে গিভ এ ফাক। তাদের কাছে রাজনীতিটা রিয়েল।ব্রিক এন্ড মরটার ফ্ল্যাশ এন্ড ব্লাড জীবন।যেইটা আমরাও জানি। এবং সেই দেশের ১৬ কোটি মানুষ জানে এবং সেই বাস্তবতায় ১৬ কোটি মানুষ প্রতি দিন এডজাস্ট করে চলে। কিন্তু, প্রথম আলো ভ্যালিডেটেড এলিটরা সেই রিয়ালিটিতে একটু পুল্টিশ মেরে দিচ্ছেন। তারা একটি অল্টারনেট রিয়ালিটি তৈরি করতেছেন যেখানে, সংবিধান নামক একটা বস্তু আছে । নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণ এবং দুর্নীতির করলে, মিডনাইট ইলেকশান করলে, সেই সংবিধান নামক বস্তুর গুরুতর অসদারন হয়। নির্বাচন কমিশানের পদত্যাগ দাবী করা যায়।একটা রাষ্ট্র রাষ্ট্র খেলা , একটা ছোট বাচ্চাদের মত দুধভাত খেলা তারা খেলতেছেন।এই রাষ্ট্রের রিয়ালিটি সম্পর্কে তারা ডন কুইকজোটের মতই অন্ধ।

সাডলি ১৬ কোটি মানুষ এই অল্টারনেট রিয়ালিটিতে বাস করে না। তারা কুষ্টিয়ার এসপির এবং আওয়ামী এলিটদের পলিটিকাল রিয়ালিটিতে প্রতিদিন তাল মিলিয়ে চলে। এবং যারা মানতে পারেনা এবং যাদের সামর্থ্য আছে, তারা কুষ্টিয়ার এসপির কথা মত পাকিস্তানে বা অন্য কোথাও চলে যায়।আমাদের প্রথম আলো ব্যাকড এলিটেরা যদি, এই জন মানুষের বাস্তবতার কাতারে নেমে আসতে পারেন, তবে, সেইটা তাদের জন্যে এবং ১৬ কোটি মানুষের জন্যে মঙ্গল।(একটু ব্রেক নিতে ঢুকলাম। আবার চলে যাবো। বাই। 😛 )

Leave a Reply

Your email address will not be published.