যে কোন এলাকায় শিল্পায়ন হবে কি হবেনা। সেইটা রাষ্ট্রের কম্পিটিটিভ এডভান্টেজ থিওরির মত এলাকা ভিত্তিক কম্পিটিটিভ এডভান্টেজ থিয়োরি প্রযোজ্য।

শিল্পায়ন আরগুমেন্ট টা খুব ইন্টেরেস্টিং, উনারা বলতে চাচ্ছেন পদ্মা সেতু হলে সেখানে ম্যান, ম্যাটেরিয়াল এবং মেশিনারি এবং উৎপাদিত পন্য ট্রান্সপোর্ট সহজ হবে, ফলে, শিল্পায়ন হবে। এবং এর ভিত্তিতে জিডিপিতে ১% থেকে ২% মানে, প্রায় ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা থেকে ৭ লক্ষ কোটি টাকার ভ্যালু এডিশান হবে।

আরগুমেন্ট টা র‍্যাশ্নাল মনে হলেও, এম্পায়ারিকালি টেকেনা। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, পদ্মা সেতু হলেই যদি নদীর ওই পারে শিল্পায়ন হয়, তবে,এই মুহূর্তে নদীর এই পারে কেন শিল্পায়ন হচ্ছেনা,? নদীর এই পাড়ে যেতে তো এখন নদী পার হতে হচ্ছেনা? বা সিলেটে তো গাড়ি দিয়ে, ৫ ঘন্টায় এক টানে চলে যাওয়া যায়, সিলেটে কেন শিল্পায়ন হলো না। বা চট্টগ্রাম থেকে একটানে পটিয়ায় চলে যাওয়া যায় এক ঘন্টায় পটিয়াতে কেন শিল্পায়ন হলো না। বা কক্সবাজারে কেন শিল্পায়ন হলোনা সেখান পর্যন্ত তো পরিবহন ব্যবস্থা ভালো। বা যমুনা সেতু হওয়ার পরে নদীর ওই পাড়ে শিল্পায়ন হয়েছে কিনা ?

দিস ইজ দা ক্রিটিকাল কয়েসচেনা। যে কোন এলাকায় শিল্পায়ন হবে কি হবেনা। সেইটা রাষ্ট্রের কম্পিটিটিভ এডভান্টেজ থিওরির মত এলাকা ভিত্তিক কম্পিটিটিভ এডভান্টেজ থিয়োরি প্রযোজ্য। প্রশ্ন হচ্ছে, নদীর ওই পাড়ে কি এমন কোন খনিজ, পন্য বা রিসোর্স আছে কিনা যা এই পাড়ে আনা যাচ্ছিল না। যদি থেকে থাকে তবে সেই রিসোর্সকে ব্যবহার করতে অবশ্যই শিল্পায়ন হবে।কিন্তু যদি না থেকে থাকে, হবেনা। এবং আমাদের জানা মতে, পদ্মা সেতুর ওই পারে, লেবার , মাটেরিয়াল বা ক্যাপিটাল বা খনিজ বা কোন রিসোর্সের এমন কোন রিসোর্স নাই যা এই পারে এনে ব্যবহার করা যাচ্ছে না যে কারনে, পদ্মা সেতু হলেই সেই গুলো ব্যবহার করে ওই পারে শিল্পায়ন হবে।

এর মধ্যে ভোলাতে শিল্প কারখানা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেইটা পদ্মা সেতু হলেও হবে না হলেও হবে। বর্তমানে, অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান ভোলাতে শিল্প তৈরিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে কারন, ভোলাতে খুব উচু চাপের নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস আছে। কিন্তু পরিবহণের জন্যে, সেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান সেভাবে হচ্ছেনা। পদ্মা সেতুর কারনে ভোলা বেনেফিটেড হতে পারে। আমার বিশ্বাস সেতু না হলেও সেইটা হবে।

আরো কিছু ছোট ছোট শিল্প হতে পারে যাদের উদ্দেশ্য এলাকার বিপণনের কষ্ট কমানো। মংলা বন্দর ফ্যাসিলিটি ব্যবহার করে, পরিবেশবাদিদের চাপের পরেও সুন্দরবনের আসে পাশে কিছু শিল্পায়ন হছে। এদের মধ্যে অনেক এলপিজি উৎপাদন কারখানা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, এলপিজির কারখানা থেকে ভোক্তা পর্যন্ত উচ্চ পরিবহন। ফলে এই ধরনের কিছু শিল্প হতে পারে, যাদের ঢাকা ভিত্তিক মালিকেরা স্থানীয় বিপননের সুবিধা নিতে শিল্প মুভ করবে। কিন্তু পুরো দেশকে মাথায় রেখে, কি ঐ পারে শিল্পায়ন হবে ? আই ডাউট।

ইউ সি বাংলাদেশের স্থানীয় বিপননের জন্যে যে শিল্প হয়,মালিকেরা চেস্টা করে নদীর পাশে সেই শিল্প করতে বা এনার্জির ক্রিটিকাল রিসোর্স এক্সেস করতে। বিগত ১০ বছরে ঢাকার অনেক ফ্যাক্টরি হবিগঞ্জে মুভ করেছে। কারন এক্টাই সেখানে গ্যাসের চাপ বেশী, যে চাপ সাভারের প্রতিষ্ঠান গুলো পাচ্ছিল না।

পদ্মা সেতু যার ব্যবহারের মুল্য বোঝা যাচ্ছে অনেক হাই হবে- সেই রকম কোন ক্রিটিকাল এডভান্টেজ অফার করছে বলে আমি মনে করিনা। এইটা কিছু ইফিসিয়েন্সি গেইন দেবে এবং টাইম ভিত্তিক অপারচুনিটি কষ্ট যাদের হাই স্পেশালি যাদের পেরিশেবাল গুডস আছে, তাদের রিস্ক টা কমাবে। ফলে, এইটা স্থানীয় সবজির ক্ষেত্রে একটা বুস্ট করতে পারে। এবং স্থানীয় বাজার ভিত্তিক কিছু শিল্পও নিঃসন্দেহে তৈরি হবে।

কিন্তু বাংলাদেশে শিল্পায়ন না হওয়ার মূল প্রব্লেম, কনফ্লিক্ট নেগোসিয়েশানের অভাব , দক্ষ মিডিল ম্যানেজমেন্টের অভাব , রেগুলেটরি আন প্রেডিক্টিবিলিটি, দুর্নীতি বাজারে বাকির সংস্কৃতি ও আওয়ামি পেটোয়াদের খুব হাই রেন্ট । এই গুলো কি পদ্মা সেতু হলে, ওই পারের শিল্পের জন্যে অটোমেটিক সল্ভ হয়ে যাবে ? তাই পদ্মা সেতুর কারনে নদীর ওই পারে এমন একটা হাই কম্পিটিটিভ এডভানটেজ তৈরি করবে, যার ফলে সেই খানে ব্যাপক শিল্পায়ন হবে এবং দেশের জিডিপি ১% বুস্ট হবে মানে, বার্ষিক উৎপাদন ৩.৫ লক্ষ টাকা বাড়বে এইটা একটা পাইপ ড্রিম। এবং খুব হাই মানের উইড ভরা পাইপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.