টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশেরই ছিল

আমি কখনই ইতিহাস নিজে আগ্রহী ছিলাম না। বাংলাদেশের ১৯৭২ থেকে ৮১ পিড়িয়ডের খুঁটিনাটি নিয়ে সবাই যখন বিবিধ বিশ্লেষণ দেয়, আমি হা করে শুনতাম আর ভাবতাম- এই গুলো এতো ডিটেলে জেনে কি হবে ?
এজ এ ম্যাটার অফ ফ্যাক্ট, আজকে থেকে পাঁচ বছর আগেও জিয়া মুজিব কাউকে নিয়েই আমার তেমন আগ্রহ ছিলনা।
আমার কাছে ইতিহাসের শুরু ছিল, ১৯৯০- যা আমি মোটামুটি বালেগ বয়সে দেখেছি। ১৯৯০ এর পরের অভিজ্ঞতা থেকেই আমি যাচাই করেছি- আমার ইতিহাসের কে হিরো? কে ভিলেন?
কিন্তু, বিগত কয়েক বছরের তীব্র অরগাজমিক ইতিহাস চেতনা আমাকে বাধ্য করেছে, ৭২ থেকে ৮১ কে নতুন করে রিভিজিট করতে। এবং আমি অনেক ডিটেলে গিয়ে দেখতে পেয়েছি- শুধু আওয়ামী বাঙালি ন্যারেটিভ নয়, বাংলাদেশের বাম সেকুলার ন্যারেটিভেই বর্তমান বাংলাদেশের যে পর্যালোচনা, যে ঐতিহাসিক ঘটনা গুলো ভিত্তিতে বলা হয় তাতে কি ভয়াবহ পরিমাণ প্রোপাগান্ডা মেশানো হয়েছে। অথচ এতো দিন এদের বয়ানে অন্ধের মত বিশ্বাস করে গ্যাছি।
এমনকি বাংলাদেশের বিগত ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমাদের অর্জনের ইতিহাস বলতে গিয়ে কিভাবে এই অর্জনে কার কন্ট্রিবিউশান কি তা বলতে কি ভয়াবহ বিকৃতির সাহায্য নিয়েছে প্রতিটি মেজর পত্রিকা।
আগামীতে এই নিয়ে অনেক কিছু বলার আছে। বলবো ।
কিন্তু, ইতিহাসকে নতুন করে পড়তে গিয়ে একটা জিনিষ আমি উপলব্ধি করেছি, কোন শাসনআমলকে সেই আমলেই যাচাই করা খুব মুশকিল।
আইয়ুব খান, শেখ মুজিব, জিয়াউর রহমান এবং এরশাদের লিগাসি গুলো সেই সময়ে সঠিক উপলব্ধি করা যায় নাই । ১০ থেকে ১৫ বছর পরে ফুটে উঠেছে।
তাদের শাসনামলের ভালো খারাপ সব কিছুর দায়, বছর কয়েক পরের জনগোষ্ঠীকে নিতে হয়েছে।
সেই ভাবনা থেকেই বলা যায়
বিগত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ যেভাবে প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে যেভাবে আওয়ামী করন করতে গিয়ে মেধার বদলে বাস্টারডাইজেন প্রক্রিয়া ক্বাথ এবং আবর্জনাকে উপরে নিয়ে এসেছে এবং তাদের হাতে এই রাষ্ট্রের সকল সম্ভাবনা যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে সেইটার দায় আমাদের খুব অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই নিতে হবে। এবং আমরা ইতোমধ্যেই নেওয়া শুরু করেছি।
১২ বছর পার করে ফেলা আওয়ামী লিগের এই রাষ্ট্র ধ্বংসের দায় গুলো একটা একটা করে ফুটে উঠা শুরু করেছে ।
প্রথম আলোর এই পেপার কাটিঙ এ যে আছে টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশেরই ছিল- এইটা তার ছোট্ট একটি উদাহরণ।
সংক্রামক অসুখের মোকাবেলায় যে গবেষণা, ট্রায়াল সহ যে ফিল্ড রিসার্চ তাতে বাংলাদেশ পৃথিবীর অগ্রগণ্য দেশ। এই সক্ষমতা গুলো গড়ে উঠেছিল বিগত ছয় দশকে । কিন্তু এখন আমরা ভারতের বা চায়নার দিকে তাকিয়ে থাকি।
মেধা সুচকে তলানিতে যে দেশ, সেইটা এমনি এমনি নয়। এই প্রতিষ্ঠান গুলোর সক্ষমতা ধ্বংস করার ফলাফল এইটা।
সব কিছু মনে রাখা হবে কবিতা আমার কাছে পরাজিতের কবিতা মনে হয়। মনে রেখে কি করবেন ? মনে রাখলেও কি না রাখলেও কি ? যা ধ্বংস করা হচ্ছে তা কি ফেরত পাবেন ?
আমি যদি কবি হতাম, আমি একটা কবিতা লিখতাম, যত দিন যাবে সব কিছুর দায় তোমার ঘাড়েই আসবে। এবং তোমাকেই সব কিছুর দায় পরিশোধ করতে হবে,কিচ্ছু যায় আসবেনা তুমি কি মনে রেখেছো, কি মনে রাখো নাই।
মসলিন তাতীদের আংগুল কাইটা দেয়া মনে রাইখা কি লাভ হইছে? সেই শিল্পটি হারিয়ে গ্যাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.